Header Ads Widget

চেম্বার ১: ইবনে সিনা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, বগুড়া । রোগী দেখার সময়: প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ১০টা (শুক্রবার বন্ধ) চেম্বার ২ : নিউ লাইফ ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার প্রতি শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। চেম্বার ৩ : একতা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার আজাদ মোড়, ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর।
চেম্বার ১: ইবনে সিনা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, বগুড়া । রোগী দেখার সময়: প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ১০টা (শুক্রবার বন্ধ) চেম্বার ২ : নিউ লাইফ ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার প্রতি শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। চেম্বার ৩ : একতা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার আজাদ মোড়, ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর।

হাত ও পা সার্জারি

হাত ও পায়ের অর্থোপেডিক সার্জারি: গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার উপায়

হাত ও পা আমাদের শরীরের গতিশীলতার প্রধান উৎস। খেলাধুলার আঘাত, বার্ধক্যজনিত রোগ বা দুর্ঘটনাজনিত কারণে যখন হাত বা পায়ের হাড়, জয়েন্ট, টেন্ডন, লিগামেন্ট বা মাংসপেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন অর্থোপেডিক সার্জারি সেই কার্যকারিতা পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অর্থোপেডিক সার্জারি শুধুমাত্র ব্যথা উপশম করে না, বরং এটি আক্রান্ত অঙ্গের পূর্ণ শক্তি এবং গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

এই পোস্টে, আমরা হাত এবং পায়ের ক্ষেত্রে অর্থোপেডিক সার্জারির প্রয়োজনীয়তা ও এর সাধারণ কিছু পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।

অর্থোপেডিক সার্জারি কী?


অর্থোপেডিক সার্জারি হলো চিকিৎসা বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা, যা আমাদের কঙ্কালতন্ত্র (musculoskeletal system) — অর্থাৎ হাড়, জয়েন্ট, লিগামেন্ট, টেন্ডন এবং পেশিগুলোর রোগ ও আঘাতের চিকিৎসা করে।

যখন কোনো আঘাত বা রোগ ওষুধের মাধ্যমে বা ফিজিওথেরাপির মতো নন-সার্জিক্যাল পদ্ধতিতে নিরাময় করা সম্ভব হয় না, তখন অর্থোপেডিক সার্জনরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান করেন।

হাতের অর্থোপেডিক সার্জারি

হাত এবং কব্জিতে প্রায়শই সূক্ষ্ম এবং জটিল অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়, কারণ এগুলি দৈনন্দিন কাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণ সমস্যা ও অস্ত্রোপচার:

  • হাড় ভাঙা (Fractures): হাত, আঙুল বা কব্জির হাড় ভেঙে গেলে, হাড়গুলিকে সঠিক অবস্থানে এনে প্লেট, স্ক্রু বা তারের সাহায্যে স্থির (Fixation) করা হয়।

  • কারপাল টানেল রিলিজ (Carpal Tunnel Release): কব্জির কারপাল টানেলের মধ্যে যে স্নায়ু (median nerve) থাকে, তা সংকুচিত হলে তীব্র ব্যথা ও অসাড়তা সৃষ্টি হয়। সার্জারির মাধ্যমে চাপ সৃষ্টিকারী লিগামেন্টটি কেটে স্নায়ুর উপর চাপ কমানো হয়।

  • টেন্ডন ও লিগামেন্টের আঘাত: খেলার আঘাত বা দুর্ঘটনার ফলে টেন্ডন (যা পেশিকে হাড়ের সাথে জোড়ে) বা লিগামেন্ট (যা হাড়কে হাড়ের সাথে জোড়ে) ছিঁড়ে গেলে তা সেলাই করে বা পুনর্গঠন (Reconstruction) করা হয়।

  • আর্থ্রাইটিস বা বাতের সমস্যা: তীব্র ব্যথার ক্ষেত্রে কব্জি বা আঙুলের ক্ষতিগ্রস্ত জয়েন্ট প্রতিস্থাপন (Joint Replacement) বা ফিউশন (Joint Fusion) করা হতে পারে।

 লক্ষ্য: হাতের সার্জারির প্রধান লক্ষ্য হলো আঘাতের কারণে হারিয়ে যাওয়া নড়াচড়ার ক্ষমতা, শক্তি এবং সংবেদনশীলতা ফিরিয়ে আনা।

পায়ের অর্থোপেডিক সার্জারি

পা শরীরের ভার বহন করে এবং আমাদের হাঁটাচলায় সাহায্য করে। পায়ের অর্থোপেডিক সার্জারি প্রায়শই শরীরের ওজন-বহনকারী অঙ্গের স্থিতিশীলতা ও ব্যথা উপশমের উপর গুরুত্ব দেয়।

সাধারণ সমস্যা ও অস্ত্রোপচার:

  • হাঁটু প্রতিস্থাপন (Knee Replacement - Arthroplasty): অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা আঘাতের কারণে হাঁটুর জয়েন্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে কৃত্রিম জয়েন্ট (prosthesis) প্রতিস্থাপন করা হয়। এটি আংশিক বা সম্পূর্ণ হতে পারে।

  • হিপ প্রতিস্থাপন (Hip Replacement - Arthroplasty): নিতম্বের জয়েন্টের ক্ষয় বা ভাঙা হাড়ের ক্ষেত্রে কৃত্রিম জয়েন্ট প্রতিস্থাপন করা হয়, যা রোগীকে স্বাভাবিক হাঁটার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে পারে।

  • হাড় ভাঙা (Fractures): পা, গোড়ালি বা পায়ের আঙুলের গুরুতর ভাঙা হাড়গুলিকে অভ্যন্তরীণ ফিক্সেশন ডিভাইস (যেমন—রড, প্লেট ও স্ক্রু) ব্যবহার করে সারানো হয়।

  • অ্যাকিলিস টেন্ডন মেরামত (Achilles Tendon Repair): পায়ের গোড়ালির শক্তিশালী অ্যাকিলিস টেন্ডন ছিঁড়ে গেলে তা সেলাই করে বা পুনর্গঠন করা হয়।

  • স্পোর্টস ইনজুরি: মেনিস্কাস বা লিগামেন্টের আঘাত (যেমন—ACL/PCL টিয়ার) মেরামতের জন্য সাধারণত আর্থ্রোস্কোপি (Arthroscopy) ব্যবহার করা হয়। এটি একটি ন্যূনতম আক্রমণাত্মক প্রক্রিয়া।

লক্ষ্য: পায়ের সার্জারি মূলত ব্যথা দূর করে এবং রোগীকে স্বাভাবিকভাবে হাঁটা, দৌড়ানো বা খেলাধুলায় ফিরে যেতে সাহায্য করে।

পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া (The Recovery Journey)

অর্থোপেডিক সার্জারির সাফল্যের জন্য অস্ত্রোপচারের মতোই গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন।

  1. বিশ্রাম এবং সুরক্ষা: অস্ত্রোপচারের পরে চিকিৎসক নির্দেশিত সময় ধরে বিশ্রাম নিতে হবে এবং আক্রান্ত অঙ্গকে সুরক্ষিত রাখতে হবে (যেমন—প্লাস্টার বা ব্রেস ব্যবহার করে)।

  2. ফিজিওথেরাপি: ফিজিওথেরাপি (Physiotherapy) বা পুনর্বাসন থেরাপি অপরিহার্য। একজন থেরাপিস্ট আপনার শক্তি, নমনীয়তা এবং গতিশীলতা ধীরে ধীরে বাড়াতে সাহায্য করবেন।

  3. ব্যথা ব্যবস্থাপনা: চিকিৎসক আপনাকে ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ দেবেন।

  4. ধৈর্য: সম্পূর্ণ সুস্থ হতে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ধৈর্য ধরে প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করা প্রয়োজন।

পরামর্শ: আপনার যদি হাত বা পায়ের হাড়, জয়েন্ট বা পেশি সংক্রান্ত দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা বা আঘাত থাকে, তবে সঠিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য দ্রুত একজন অর্থোপেডিক সার্জনের সাথে পরামর্শ করুন।

Post a Comment

0 Comments